৩ দিনে কক্সবাজার - ঢেউ, সূর্যাস্ত আর এক সমুদ্রের প্রেমকথা
- Sakif Ahsan
- Oct 5
- 2 min read
প্রথম দিন – সমুদ্রের সঙ্গে প্রথম দেখা - সকালে ঢাকা থেকে বাসে বা ফ্লাইটে চেপে কক্সবাজার পৌঁছেই মনে হলো—বাংলাদেশের হৃদয়ে যদি কোনো স্বর্গ থাকে, তবে সেটি এখানেই। বাস বা ট্যাক্সি থেকে নামতেই সমুদ্রের গর্জন শোনা গেল—একটা তীব্র অথচ শান্ত ডাক।
হোটেলে ব্যাগ রেখে সোজা সমুদ্র সৈকতে ছুটে গেলাম। সূর্যের আলোয় সোনালি বালু ঝিলমিল করছে, ঢেউ এসে পায়ের কাছে মিশে যাচ্ছে। সেই মুহূর্তে মনে হলো—জীবনের সব ক্লান্তি, সব ব্যস্ততা যেন এই নীল জলরাশির ভেতর মিশে গেল।
রাতে ল্যাবনি বিচে হাঁটতে হাঁটতে মনে হলো, ঢেউয়ের আওয়াজও কখনো কখনো কথার চেয়ে বেশি মিষ্টি। আকাশভরা তারা, সমুদ্রের গর্জন, আর বাতাসের ছোঁয়া—সব মিলিয়ে এক অবিস্মরণীয় সন্ধ্যা।
দ্বিতীয় দিন – হিমছড়ি, ইনানী আর পাহাড়ের আহ্বান দুপুরে বের হলাম হিমছড়ি জলপ্রপাত আর ইনানী বিচ এর পথে। পথে ছোট ছোট দোকান, পাহাড় আর সমুদ্রের ধার ঘেঁষে চলা রাস্তা — সব মিলিয়ে এক সিনেমার দৃশ্যের মতো।
হিমছড়ির পাহাড়ে উঠতে উঠতে মনে হলো—প্রকৃতি যেন নিজেই ছবি আঁকছে। উপরে উঠে সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে মন ভরে গেল। ইনানীর নীলচে পাথরগুলো সূর্যের আলোয় ঝলমল করছে, আর ঢেউ এসে সেই সৌন্দর্য ছুঁয়ে দিচ্ছে।
সন্ধ্যায় ফিরে এসে আবার সৈকতে বসে সূর্যাস্ত দেখলাম। সেই রঙিন আকাশ, সোনালি সূর্য আর ঢেউয়ের শব্দ—সবকিছু মিলে মনে হলো, পৃথিবী যেন মুহূর্তের জন্য থেমে গেছে।
তৃতীয় দিন – মহেশখালী ও সেন্টমার্টিনের স্বপ্নভ্রমণ শেষ দিনে গেলাম মহেশখালী দ্বীপে। শান্ত পরিবেশ, মন্দির, আর মানুষের সরলতা মুগ্ধ করল। এরপর সকালে বোটে করে সেন্টমার্টিনের পথে রওনা হলাম।
সমুদ্রের উপর দিয়ে বোট চলার সময় চারপাশে শুধু জল আর আকাশ। সেখানে গিয়ে নেমেই মনে হলো—এ যেন অন্য এক জগৎ। স্বচ্ছ নীল পানি, ছোট নারকেল গাছ আর সাদা বালু মিলে স্বপ্নের দ্বীপ তৈরি করেছে।
সেন্টমার্টিনের সন্ধ্যায় সূর্য যখন ধীরে ধীরে সমুদ্রের ভেতর হারিয়ে গেল, তখন মনে হলো—ভ্রমণ মানে শুধু জায়গা দেখা নয়, নিজের ভেতরের প্রশান্তিকে খুঁজে পাওয়া।
ফেরার পথে তিন দিনের এই ভ্রমণ শেষে মনে হলো — কক্সবাজার শুধু একটি সমুদ্র নয়, এটি অনুভূতির এক নাম। এখানে ঢেউয়ের মতোই আনন্দ আসে, আর সূর্যাস্তের মতোই শান্তি মেলে।







Comments